দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় শোভাযাত্রা। উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল বিশালাকৃতির ৪০ ফুট উঁচু রথ, যাতে অধিষ্ঠিত ছিলেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। ঐতিহ্যবাহী রীতিতে ভক্তরা রথের দড়ি টেনে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। শোভাযাত্রার এক পর্যায়ে হেলিকপ্টার থেকে রথের ওপর পুষ্পবৃষ্টি করা হয়, যা উপস্থিত দর্শকদের জন্য ছিল এক বিশেষ চমক। সনাতন ধর্মীয় এই আচার, ভক্তদের মধ্যে সৃষ্টি করে এক অনন্য আধ্যাত্মিক আবহ ও ঐতিহ্যের ছোঁয়া।

উৎসবস্থলে দুটি পৃথক মঞ্চে পরিবেশিত হয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, কীর্তন, নাট্য পরিবেশনা ও নৃত্য। স্থানীয় শিল্পীরা ছাড়াও বিভিন্ন বয়সী তরুণ-তরুণীরা অংশগ্রহণ করেন এই পরিবেশনায়। ইসকনের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিনামূল্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়, যা বিপুল জনপ্রিয়তা পায় উপস্থিত জনতার মধ্যে। মেলার অংশ হিসেবে প্রায় ২০টি স্টলে প্রদর্শিত হয় ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক, গয়না, হেনা ট্যাটু, খাদ্যপণ্য ও হস্তশিল্প। শিশুদের জন্য ছিল মুখ আঁকা, কারুশিল্প কর্মশালা ও পারিবারিক যোগ সেশন। এছাড়া আয়োজন করা হয় সংস্কৃতিক ওয়ার্কশপও।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোভি শহরের মেয়র জাস্টিন ফিশার। তিনি উৎসবে স্বাগত ভাষণে বলেন, এই উৎসব নোভির বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি, যা শান্তি, ভ্রাতৃত্ব এবং পারস্পরিক সহাবস্থানের অনন্য বার্তা বহন করে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইসকন ডেট্রয়েটের রথযাত্রা উৎসব মিশিগানের দীর্ঘতম ও বৃহত্তম উৎসবগুলোর একটি, যা টানা চার দশকেরও বেশি সময় ধরে উদ্যাপিত হয়ে আসছে। নোভির মানুষের কাছে এটি এখন এক প্রিয় বার্ষিক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।